Ad Code

ফুটপাত থেকে মাধ্যমিক পাশ: সনিয়া ও প্রিয়াঙ্কার জীবনের লড়াইয়ের এক অসাধারণ অধ্যায়

WB Madhyamik Result 2025: ফুটপাত থেকে মাধ্যমিক পাশ: সনিয়া ও প্রিয়াঙ্কার জীবনের লড়াইয়ের এক অসাধারণ অধ্যায়



অসংখ্য প্রতিকূলতার মধ্যে থেকেও অনুপ্রেরণা মূলক সাফল্যের গল্প মাঝে মাঝেই সামনে আসে। তবে টালিগঞ্জের সনিয়া ঘোষ ও কালীধন ইনস্টিটিউশনের প্রিয়াঙ্কা প্রামাণিকের গল্পটি নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রম। কারণ, ওরা বড় হয়েছে ফুটপাতে—ছাদবিহীন জীবন, খোলা আকাশের নিচে শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা সবই সামলাতে হয়েছে রাস্তায় বসবাস করেই।

এই কঠিন বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে ওরা সফলভাবে পেরিয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা—একজন পেয়েছে ২১০, আরেকজন ২১২। যদিও নম্বরে কোনও চমক নেই, কিন্তু যে পরিস্থিতি পেরিয়ে ওরা পরীক্ষায় বসেছে, তাতেই লুকিয়ে আছে বড় জয়।

এই সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছেন সমাজকর্মী মিত্রবৃন্দা ঘোষ, যিনি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। তিনি জানান, করোনার সময় ফুটপাতে খাবার দিতে গিয়ে সনিয়া ও প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে পরিচয় হয়। তখনই বুঝতে পারেন ওরা আঁকাআঁকিতে আর পড়াশোনায় আগ্রহী।

করোনার পর তাদের সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি করানো হয়। তারপর থেকেই শুরু হয় কঠোর অধ্যবসায়ের পথচলা। মিত্রাদেবী নিজের ভাড়া বাড়িতে ৪০ জন মেয়ের পড়াশোনার ব্যবস্থা করেন, সেখান থেকেই মাধ্যমিকের প্রস্তুতি নেয় সনিয়া ও প্রিয়াঙ্কা। তবে রাত হলেই ফিরে যেতে হয় রাস্তার জীবনে, খোলা আকাশের নিচে।

ফলাফল প্রকাশের দিন চোখে জল নিয়ে বলে ওঠে ওরা, “ম্যাডাম না থাকলে কিছুই হতো না!” এখন ওদের সামনে প্রশ্ন—এরপর কীভাবে চলবে পড়াশোনা? কারণ উচ্চশিক্ষার খরচ অনেক বেশি।

মিত্রাদেবী বলেন, “আমার নিজের মেয়েও আছে। ওরাও আমার মেয়ের মতোই। এভাবে থেমে যেতে দিই কী করে? ওদের এই লড়াই এভারেস্ট জয়ের চেয়ে কম নয়। কোনও না কোনও পথ নিশ্চয়ই বের করব।”

এই কিশোরীদের অদম্য সাহস ও ইচ্ছাশক্তি প্রমাণ করে দেয়—পরিস্থিতি যতই কঠিন হোক, ইচ্ছা থাকলে পথ বের হয়ই।

Post a Comment

0 Comments

Close Menu